top of page

৪০ টি নির্বাচিত হাদীস

Updated: Apr 17, 2022



# ০১

'নিয়ত সকল কর্মের অঙ্কুর।

প্রত্যেকের কর্মের মূল্যায়ন করা হবে তার নিয়ত বা অভিপ্রায় অনুসারে।

কেউ যদি আল্লাহ ও তাঁর রসুলের সন্তুষ্টির জন্যে হিজরত করে,

তবে সে সেভাবেই মূল্যায়িত হবে। আর যদি কেউ পার্থিব ধনসম্পত্তি বা

কোনো নারীকে পাওয়ার জন্যে হিজরত করে,

তবে তার মূল্যায়নও সেভাবেই হবে।

[হিজরত অর্থ দেশত্যাগ। দেশত্যাগী বা শরণার্থীর জীবনে কষ্ট অনেক। অর্থাৎ

দুনিয়া হোক বা আখেরাত, একজন মানুষ যে উদ্দেশ্যে কষ্ট স্বীকার করছে,

মূল্যায়নটা হবে সেভাবেই। কষ্ট করার উদ্দেশ্যটাই গুরুত্বপূর্ণ। উম্মে কায়েস

নামে এক কুমারীকে বিয়ে করার জন্যে মক্কা থেকে এক যুবক মদিনায় এলে

নবীজী (স) একথা বলেন।]'


# বর্ণনাকারী- ওমর ইবনে খাত্তাব (রা);

# গ্রন্থ- বোখারী, মুসলিম



# ০২

আল্লাহ বলেন, ‘হে আদম সন্তান!

কল্যাণার্থে ব্যয় করো, তোমাকেও সেভাবেই দেয়া হবে।’


# বর্ণনাকারী- আবু হুরায়রা (রা);

# গ্রন্থ- বোখারী, মুসলিম


# ০৩

'আল্লাহ বলেন, বান্দার ধারণা অনুসারেই

আমি তার সামনে প্রতিভাত হই।

সে যখন প্রার্থনা করে, আমি তার সাথেই থাকি।

সে যদি মনে করে- আমি তাকে অনুগৃহীত করব,

আমি তাকে তখন অনুগৃহীত করি।

আর যদি সে মনে করে- আমি তার প্রতি বিরূপ,

তবে সে বিরূপতারই সম্মুখীন হবে।'


# বর্ণনাকারী- আবু হুরায়রা (রা); আহমদ


# ০৪

'আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমাকে যেভাবে কল্পনা করে,

আমি তার জন্যে সে-রকমই।

যখন সে আমাকে স্মরণ করে, আমি তার সাথে থাকি।

সে যখন মনে মনে আমাকে স্মরণ করে,

আমিও তখন তাকে স্মরণ করি।

যখন সে কোনো সমাবেশে আমাকে স্মরণ করে,

আমি তখন তার চেয়ে ভালো সমাবেশে তাকে স্মরণ করি।'


# বর্ণনাকারী- আবু হুরায়রা (রা);

# গ্রন্থ- বোখারী, মুসলিম


# ০৫

'আল্লাহ বলেন, যখন কোনো বান্দা আমার পথে

এক বিঘত অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে একহাত এগিয়ে যাই।

যখন সে আমার দিকে একহাত এগিয়ে আসে,

আমি তখন তার দিকে দুই হাত এগিয়ে যাই।

আর যখন সে আমার দিকে হেঁটে আসে,

আমি তখন তার দিকে দৌড়ে যাই।'


# বর্ণনাকারী- আনাস ইবনে মালেক (রা);

# গ্রন্থ- বোখারী, মুসলিম



# ০৬

'আল্লাহ বলেন, বান্দা যদি আমার সাথে মিলিত হতে ভালবাসে,

আমিও তার সাথে মিলিত হতে ভালবাসি। বান্দা যদি আমার সাথে মিলিত

হওয়াকে অপছন্দ করে, আমিও তার সাথে মিলিত হওয়াকে অপছন্দ করি।'


# বর্ণনাকারী- আয়েশা (রা), আবু হুরায়রা (রা);

# গ্রন্থ- বোখারী, মুসলিম


# ০৭

'আল্লাহ বলেন : ‘হে মানুষ! আমি কারো ওপর জুলুম করি না।

এবং তোমাদের পরস্পরের ওপর জুলুম করাকে নিষিদ্ধ করেছি।

অতএব তোমরা পরস্পরের ওপর জুলুম কোরো না।

হে মানুষ! তোমরা তো দিনরাত পাপ করো।

আমি তোমাদের পাপমোচন করি।

এতে আমার কিছু যায়-আসে না।

অতএব তোমরা আমার কাছে ক্ষমা চাও।

আমি তোমাদের ক্ষমা করে দেবো।

হে মানুষ! আমি না খাওয়ালে তোমরা অভুক্ত থাকবে।

অতএব আমার কাছে জীবনোপকরণ চাও।

আমি তোমাদের জীবনোপকরণ দেবো।

হে মানুষ! আমি পরিধেয় বস্ত্র দান না করলে তোমরা সবাই

বস্ত্রহীন থাকবে। অতএব আমার কাছে চাও।

আমি তোমাদের পোশাক দেবো।

হে মানুষ! তোমরা যদি সবাই সর্বোচ্চ মাত্রার ধর্মপরায়ণ হয়ে যাও,

তবুও তাতে আমার সাম্রাজ্যের কিছু বৃদ্ধি পাবে না।

তোমাদের সবার অন্তর যদি চরম পাপিষ্ঠ হয়ে যায়,

তবুও তা আমার সাম্রাজ্যে কোনো ঘাটতি সৃষ্টি করবে না।

আর তোমরা যদি সবাই সমবেত হয়ে চাইতে থাকো

এবং তোমাদের সব চাওয়া যদি আমি পূরণ করে দেই

এবং তা যদি তোমরা নিয়ে যেতে থাকো,

তবুও তোমরা শুধু ততটুকুই নিতে পারবে-

সমুদ্রে একটি সুচ ডুবিয়ে তা তুললে

যতটুকু পানি সুচের গায়ে লেগে থাকে।

অতএব হে মানুষ! এই হচ্ছে তোমার কর্ম।

বিচার হবে তোমাদেরকে প্রদত্ত বিধান অনুসারে।

অতএব যারা সৎকর্ম করেছ, তারা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করো।

আর যারা এর বিপরীত কাজ অর্থাৎ অপকর্ম করেছ

তারা সেজন্যে নিজেদেরকেই দোষারোপ করো।’


# বর্ণনাকারী- আবু যর গিফারী (রা);

# গ্রন্থ- মুফরাদ (বোখারী)


# ০৮

'আল্লাহ বলেন, তোমরা আমার ইবাদতের জন্যে আন্তরিকভাবে

সময় অন্বেষণ করো। তাহলে তোমার অন্তর তৃপ্ত হবে,

তোমার অভাব দূর হবে। তা না হলে তোমার কর্মব্যস্ততা বাড়বে,

কিন্তু তুমি অভাবী ও সমস্যাগ্রস্তই থেকে যাবে।


# বর্ণনাকারী- আবু হুরায়রা (রা);

# গ্রন্থ- তিরমিজী


# ০৯

'আল্লাহ বলেন, ‘হে আদম সন্তান! তুমি যতদিন পর্যন্ত আমার কাছে

দোয়া করতে থাকবে এবং ক্ষমাপ্রার্থনা করতে থাকবে,

আমি ততদিন পর্যন্ত তোমার গুনাহ মাফ করতে থাকব।

তোমার গুনাহ যদি আকাশচুম্বীও হয় আর তুমি যদি আমার কাছে

ক্ষমাপ্রার্থনা করো, তাহলেও আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেবো।

আমার সাথে শরিক না করে তুমি যত গুনাহ করো না কেন,

আমি ক্ষমা করে দেবো।’


# বর্ণনাকারী- আনাস ইবনে মালেক (রা);

# গ্রন্থ- তিরমিজী


# ১০

আল্লাহ বলেন, ‘হে মানুষ! আমি যখন তোমার সবচেয়ে প্রিয়

দুটি জিনিস (দু-চোখ) তোমার কাছ থেকে নিয়ে নিই

আর দৃষ্টিশক্তি হারানোর পরও তুমি যখন ধৈর্যশীল থাকো,

তখন আমি তোমাকে পুরস্কৃত করব জান্নাত দিয়ে।’


# বর্ণনাকারী- আবু উমামা (রা), আনাস (রা)

# গ্রন্থ- মুফরাদ


# ১১

আল্লাহ বলেন, মানুষের প্রতিটি আমল বা কাজ হচ্ছে

তার নিজের জন্যে। আর রোজা হচ্ছে কেবল আমার জন্যে।

(আমার জন্যেই সে খাবার ও পানীয় গ্রহণ থেকে

বিরত থাকে এবং যৌন কামনা-বাসনাকে সংযত করে।)

তাই রোজার পুরস্কার আমিই তাকে দেবো।

রোজা হচ্ছে (পাপাচার ও জাহানড়বামের আগুনের বিরুদ্ধে) বর্ম।

অতএব তোমরা যখনই রোজা রাখো, তখন ফালতু আজেবাজে

অপ্রয়োজনীয় কথা বলবে না, চেঁচামেচি করবে না।

কেউ গালি দিলে বা ঝগড়া করতে এলে বলবে, আমি রোজাদার।

রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মৃগনাভির (বিশেষ সুগন্ধি)

গন্ধের চেয়েও পছন্দনীয়। রোজাদার দুটি আনন্দ লাভ করে।

প্রমত, ইফতারের সময়। দ্বিতীয় আনন্দ লাভ করবে

যখন সে তার প্রতিপালকের সাথে মিলিত হবে।


# বর্ণনাকারী- আবু হুরায়রা (রা)

# গ্রন্থ- বোখারী, মুসলিম



# ১২

আল্লাহ প্রতিটি রোগের নিরাময় পাঠিয়েছেন।


# বর্ণনাকারী- আবু হুরায়রা (রা)

# গ্রন্থ- বোখারী


# ১৩

বিশ্বাস বা ঈমানের পর তোমার প্রতি স্রষ্টার সবচেয়ে বড় নেয়ামত হচ্ছে স্বাস্থ্য ও সুস্থতা।


# বর্ণনাকারী- আবু বকর সিদ্দীক (রা)

# গ্রন্থ- আহমদ


# ১৪

তোমার ওপর তোমার শরীরের হক রয়েছে।

অতএব শরীরের হক ঠিকভাবে আদায় করো।


# বর্ণনাকারী- আবু জুহাইফা (রা)

# গ্রন্থ- বোখারী


# ১৫

মানুষ (সাধারণভাবে) আল্লাহ প্রদত্ত দুটি নেয়ামত স্বাস্থ্য ও সম্পদের (সময় ও অর্থের সবচেয়ে বেশি) অপচয় করে।

ফলে যতটা ইবাদত করা উচিত ছিল, তা করতে সে ব্যর্থ হয়।


# বর্ণনাকারী- আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা)

# গ্রন্থ- বোখারী


# ১৬

যখন আল্লাহ কোনো বিশ্বাসীকে দৈহিক রোগ-ব্যাধি দেন,

সুস্থ অবস্থায় সে যে কাজ বা আমল করত,

অসুস্থতার পুরো সময়টাতে তার আমলনামায়

সে নেকিগুলোই লেখা হতে থাকবে। আল্লাহ তাকে নিরাময় করলে

তিনি তাকে সকল গুনাহ থেকে মুক্ত করে দেন।

আর যদি মৃত্যু দান করেন, তবে তাকে ¶মা করে দেন।


# বর্ণনাকারী- আনাস ইবনে মালেক (রা)

# গ্রন্থ- বোখারী, হাকেম


# ১৭

যখন কোনো বিশ্বাসী বিপদ-আপদ, রোগশোক, দুঃখকষ্ট,

দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা-বেদনা, আঘাত-দুর্ঘটনা, দুর্বলতায় আক্রান্ত হয়,

তখন আল্লাহ এগুলোকে তার গুনাহর কাফফারা করে দেন।

(যদি সে ধৈর্য ধরে।)


# বর্ণনাকারী- আবু সাঈদ (রা), আবু হুরায়রা (রা)

# গ্রন্থ- মুসলিম, আহমদ, মুফরাদ


# ১৮

মান্না বা মাশরুমের পানি চোখের রোগ নিরাময়ে সহায়ক।


# বর্ণনাকারী- সাঈদ ইবনে জায়েদ (রা)

# গ্রন্থ- বোখারী, মুসলিম


# ১৯

মৃত্যু ছাড়া সকল রোগের নিরাময় কালোজিরায় আছে।


# বর্ণনাকারী- আবু হুরায়রা (রা)

# গ্রন্থ- তিরমিজী, ইবনে মাজাহ


# ২০

জ্বর জাহান্নামের আগুনের উত্তাপের খুবই নগণ্য একটা নমুনা।

তোমরা পানি দিয়ে তা ঠান্ডা করো।


# বর্ণনাকারী- আয়েশা (রা)

# গ্রন্থ- বোখারী, মুসলিম


# ২১

তোমরা জ্বরকে গালি দিও না। কামারের হাপর যেভাবে

লোহার মরিচা পরিষ্কার করে, তেমনি জ্বর তোমাকে গুনাহমুক্ত করে।


# বর্ণনাকারী- জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা)

# গ্রন্থ- মুসলিম, ইবনে হিব্বান


# ২২

রোগীদের দেখতে যাও এবং শবযাত্রায় অংশ নাও।

তাহলে আখেরাতের কথা বেশি বেশি মনে পড়বে।


# বর্ণনাকারী- আবু সাঈদ খুদরী (রা)

# গ্রন্থ- বোখারী, ইবনে হিব্বান


# ২৩

আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে যখন কেউ আপন ভাই বা কোনো

অসুস্থ মানুষকে দেখতে যায়, তখন একজন ঘোষক তাকে বলে,

‘তুমি আনন্দিত হও, তোমার যাত্রা শুভ হোক,

জান্নাতে তোমার মর্যাদা সুউচ্চ হোক’।


# বর্ণনাকারী- আবু হুরায়রা (রা)

# গ্রন্থ- তিরমিজী, ইবনে মাজাহ, আহমদ


# ২৪

কেউ যখন কোনো অসুস্থ মানুষকে দেখতে যায়,

তখন সে আল্লাহর রহমতের ছায়ায় প্রবেশ করে।

যত¶ণ পর্যন্ত সে রোগীর সাথে থাকে,

তত¶ণ পর্যন্ত সে রহমত দ্বারা পুর¯ৃ‹ত হতে থাকে।


# বর্ণনাকারী- আলী ইবনে আবু তালিব (রা)

# গ্রন্থ- ইবনে মাজাহ


# ২৫

রোগীকে দেখতে গিয়ে নবীজী (স) বললেন

‘ইনশাল্লাহ! তুমি গুনাহমুক্ত হবে, সুস্থ হবে।’


# বর্ণনাকারী- আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা)

# গ্রন্থ- বোখারী


# ২৬

যখন তুমি কোনো পীড়িতকে দেখতে যাও, তখন তাকে সান্ত্বনা দাও

এবং বলো- ‘তুমি সুস্থ ও দীর্ঘজীবী হবে।’


# বর্ণনাকারী- আবু সাঈদ খুদরী (রা)

# গ্রন্থ- মেশকাত


# ২৭

রোগীকে দেখতে গেলে তার পাশে বসবে।

মৃদু স্বরে কথা বলবে।

সেখানে উপস্থিত কারো সাথে কোনো বিষয়ে

তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়বে না।


# বর্ণনাকারী- আবুদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা)

# গ্রন্থ- মেশকাত


# ২৮

রোগীকে দেখতে গিয়ে সেখানে বেশি¶ণ বসে থাকবে না।

(কারো উপস্থিতি যদি রোগী বেশি পছন্দ করে তবে ভিন্ন কথা।)


# বর্ণনাকারী- সাঈদ ইবনে মুসাইয়িব (রা)

# গ্রন্থ- মেশকাত


# ২৯

যখন তোমরা কোনো রোগীর কাছে যাবে, তখন ভালো কথা,

ইতিবাচক কথা বলবে (নেতিবাচক কথা বলবে না)।

কারণ তোমরা তখন যা বলো,

ফেরেশতারা তার সাথেই ‘আমিন’ বলেন।


# বর্ণনাকারী- উম্মে সালামা (রা)

# গ্রন্থ- মুসলিম, মেশকাত


# ৩০

প্রত্যেকটি ভালো কাজই সৎকর্ম, সাদাকা বা দান বা সেবা।


# বর্ণনাকারী- জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা)

# গ্রন্থ- বোখারী, মুসলিম


# ৩১

মহাবিচার দিবসে তোমাদের প্রত্যেকের সাথেই তার প্রতিপালক

কথা বলবেন। এই কথাবার্তায় কোনো দোভাষী থাকবে না।

যখন ডানে তাকাবে, তুমি তখন তোমার অতীত ভালো কাজ দেখতে পাবে।

বামে তাকালে তুমি তোমার অতীত মন্দ কাজ দেখবে।

আর সামনে দেখবে জাহান্নামের লেলিহান আগুন।

তাই সময় থাকতে, এমনকি এক টুকরা খেজুর দান করে হলেও

নিজেকে বাঁচাও। আর তা-ও যদি না পারো,

তবে হাসিমুখে কথা বলে, ভালো কথা বলে ও ভালো ব্যবহার করে

নিজেকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও।


# বর্ণনাকারী- আদী ইবনে হাতিম (রা)

# গ্রন্থ- বোখারী, মুসলিম


# ৩২

আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে দান করলে সেই সাদাকা বা দান

গ্রহীতার হাতে পৌঁছার আগেই আল্লাহর কাছে পৌঁছে যায়।

তাবারানী


# ৩৩

নিজের প্রিয় ও পছন্দনীয় জিনিস থেকে দানই উত্তম দান।


# বর্ণনাকারী- আনাস ইবনে মালেক (রা)

# গ্রন্থ- বোখারী, মুসলিম



# ৩৪

তোমরা রোগ নিরাময়ের জন্যে সাদাকা দাও।

জামে উস-সগীর


# ৩৫

প্রতিদিন সকালে দুজন ফেরেশতা অবতীর্ণ হন।

একজন (সকালে যে দান করেছে এমন) দাতার জন্যে প্রার্থনা করেন :

‘হে আল্লাহ! দাতাকে সর্বোত্তম পুরস্কার দান করো।’

আর অন্যজন (দান করা থেকে বিরত কৃপণের জন্যে)

প্রার্থনা করে : ‘হে আল্লাহ! কৃপণের ধন বিনষ্ট করো।’


# বর্ণনাকারী- আবু হুরায়রা (রা)

# গ্রন্থ- বোখারী, মুসলিম


# ৩৬

সাদাকা অকল্যাণ ও বালা-মুসিবতের দরজা বন্ধ করে।


# বর্ণনাকারী- আলী ইবনে আবু তালিব (রা)

# গ্রন্থ- রাজিন (মেশকাত)


# ৩৭

একজন মানুষের মৃত্যুর সাথে সাথে তার সকল সৎকর্মের

সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু তিনটি সৎকর্মের সওয়াব বা নেকি

সে সবসময় পেতে থাকবেÑ

১. সদকায়ে জারিয়া অর্থাৎ যে স্থায়ী দান থেকে

মৃত্যুর পরও মানুষ উপকৃত হয়।

যেমন : শি¶াপ্রতিষ্ঠান, সেবামূলক প্রতিষ্ঠান।

(তাই মৃত্যুর আগেই নিজের এক-তৃতীয়াংশ সম্পত্তি

সেবামূলক কাজে ওয়াকফ করুন।)

২. (কথন, লিখন প্রকাশ বা বিতরণের মাধ্যম) প্রচারিত জ্ঞান

(কোরআনের জ্ঞান এবং এমন পুস্তক, যা সঠিক জীবনদৃষ্টি প্রদান করে

মানুষকে দুনিয়া ও আখেরাতে সাফল্যের সরলপথ দেখায়)।

৩. সুসন্তান (যে তার জন্যে দোয়া ও দান করে)।


# বর্ণনাকারী- আবু হুরায়রা (রা)

# গ্রন্থ- মুসলিম, আবু দাউদ


# ৩৮

সাতটি কাজের নেকি একজন মানুষ তার মৃত্যুর পরও পেতে থাকবে।

১. জ্ঞানাগার (অর্থাৎ বই বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান), ২. খাল খনন,

৩. পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, ৪. বৃক্ষরোপণ,

৫. মসজিদ নির্মাণ, ৬. কোরআনের কপি বিতরণ,

৭. নেক সন্তান, যে তার জন্যে দোয়া করবে।


# বর্ণনাকারী- আনাস ইবনে মালেক (রা)

# গ্রন্থ- বাজ্জার

[সদকায়ে জারিয়ার ধারণা বাংলার মুসলমানদের অন্তরে এত বদ্ধমূল ছিল যে,

ইংরেজরা বাংলা দখল করার আগে বাংলার এক-তৃতীয়াংশ স্থাবর সম্পদই

ছিল ওয়াকফ সম্পত্তি। এই ওয়াকফ সম্পত্তি দিয়েই মুসলমানদের

শি¶াব্যবস্থা, এতিমখানা, মুসাফিরখানা ও সেবামূলক কাজ পরিচালিত হতো।

ইংরেজরা বাংলা দখল করে প্রমেই এই বিশাল ওয়াকফ সম্পত্তি গ্রাস করে।

ফলে মুসলমানদের পুরো শি¶াব্যবস্থা ভেঙে পড়ে।]


# ৩৯

এক আবেদ পাহাড়ে হেঁটে বেড়ানোর সময় হঠাৎ

গায়েবি আওয়াজ শুনতে পেলেন যে, ‘অমুকের বাগানে পানি দাও’।

কিছুক্ষণ পরই বৃষ্টি শুরু হলো এবং পানি পাহাড়ের পাশে একটি নালা দিয়ে

গড়াতে লাগল। তিনি কৌতহলী হয়ে ঐ নালাকে অনুসরণ করলেন।

কিছুদূর গিয়ে তিনি দেখলেন, একজন কৃষক কোদাল দিয়ে

মাটি কেটে বাগানে পানি ঢোকার পথ করে দিচ্ছে।

নাম জিজ্ঞেস করতেই তিনি চমকে উঠলেন। কারণ গায়েবি আওয়াজে এ

ব্যক্তির বাগানেই পানি দিতে বলা হয়েছিল। তার কাছে জানতে চাইলেন যে-

কোন পুণ্যের বিনিময়ে প্রকৃতি এভাবে তাকে সহযোগিতা করছে?

তিনি তখন বললেন, পুণ্যের কথা আমি বলতে পারব না।

তবে আমি এ বাগানের ফসলকে তিন ভাগ করি।

একভাগ পরিবারের ভরণপোষণ,

একভাগ জমিতে বিনিয়োগ এবং বাকি

একভাগ দান করি।

এজন্যেই হয়তো আল্লাহ আমাকে এভাবে সাহায্য করেন।


# বর্ণনাকারী- আবু হুরায়রা (রা);

# গ্রন্থ- মুসলিম


# ৪০

একজন কারিগর বা মিস্ত্রিকে সাহায্য করা সাদাকা।

হালাল উপার্জনের জন্যে কোনো ব্যক্তিকে কারিগরি বা

বৃত্তিমূলক শি¶াদান সাদাকা।


# বর্ণনাকারী- আবু যর গিফারী (রা)

# গ্রন্থ- বোখারী, মুসলিম




1 Comment


Inshallah All possible.

Like
Post: Blog2_Post
bottom of page